ফাইল ছবি
গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা গেছে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার পেছনে ছিল একটি সুসংগঠিত ‘শুটার মিশন’। হত্যাকাণ্ডের আগে টার্গেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি, গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং পালানোর রুট নির্ধারণ—সবকিছুই ছিল পূর্বপরিকল্পিত।
তদন্তে দেখা গেছে, শুটার ফয়সাল ও হাদির প্রথম পরিচয় হয় বাংলামোটরের ইনকিলাব মঞ্চের কালচারাল সেন্টারে। গত ৪ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১৮ মিনিটে ফয়সাল তার সহযোগী কবিরকে নিয়ে সেখানে আসে। প্রায় ছয় মিনিটের ওই বৈঠকে হাদির সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে ফয়সাল। এটিই ছিল বিশ্বাস অর্জনের প্রথম ধাপ।
এরপর ৯ ডিসেম্বর রাতে ফয়সাল আবার কালচারাল সেন্টারে আসে। এবার তার সঙ্গে ছিল আলমগীর। ওই বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল হাদির নির্বাচনী প্রচারণা। এর মধ্য দিয়েই ফয়সাল হাদির টিমে ঢুকে পড়ে। পরদিন ১০ ডিসেম্বর সেগুনবাগিচায় হাদির প্রচারণায় সরাসরি অংশ নেয় সে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার পরই হাদিকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেয় ফয়সাল। নরসিংদী, সাভার ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় রেকি চালানো হয়। ১১ ডিসেম্বর পশ্চিম আগারগাঁওয়ে বোনের বাসায় উঠে হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
হামলার দিন ভোরে উবারে করে ফয়সাল ও আলমগীর হেমায়েতপুরের একটি রিসোর্টে যায়। রিসোর্টের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভোর ৫টা ২২ মিনিটে তারা গ্রিন জোন রিসোর্টে প্রবেশ করে। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া ও তার বোন।
সেখানে হাদির একটি ভিডিও দেখিয়ে ফয়সাল জানায়, সে হাদির মাথায় গুলি করার পরিকল্পনা করেছে এবং এতে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হবে। ঘটনার পর সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেয় সে।
সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে রিসোর্ট ছাড়ার পর বান্ধবীকে বাড্ডায় নামিয়ে দেয় ফয়সাল। বেলা ১১টা ৫ মিনিটে আগারগাঁওয়ের বাসা থেকে মোটরসাইকেলে বের হয়ে সরাসরি সেগুনবাগিচায় হাদির প্রচারণায় পৌঁছায় তারা।
প্রচারণা শেষে দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে হাদি মতিঝিলের উদ্দেশে রওনা হলে ফয়সাল ও আলমগীর তার অটোরিকশা অনুসরণ করতে থাকে। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে জামিয়া দারুল উলুম মসজিদের সামনে পৌঁছানোর পর তারা আবারও হাদির সঙ্গে যুক্ত হয়।
নামাজ শেষে দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে হাদি রওনা দিলে শুটাররা পিছু নেয়। দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে ঢুকে পড়ে তারা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা সুযোগ খুঁজে বেড়ানোর পর দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে খুব কাছ থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়ে ফয়সাল।
আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তীতে তার মরদেহ দেশে আনা হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে দাফন করা হয়।
৪র্থ তলা, হাউজ# ২৭, রোড# ১ ব্লক# এ বনশ্রী , রামপুরা, ঢাকা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ ইয়াছিন মিয়া
নিউজ
ফোনঃ +880 1975681488
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +880 1975681488
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
©️২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || sobarkotha.com