ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫
নিউজ ডেস্ক :
প্রকাশিত : ০৪:৩৭ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
Digital Solutions Ltd

খালেদা জিয়ার জীবনের নীরব ছায়াসঙ্গী ফাতেমা বেগম: আলোচনার আড়ালে থাকা এক মানবিক ইতিহাস

প্রকাশিত : ০৪:৩৭ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক :

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়ার নাম উচ্চারিত হলেই সামনে আসে আন্দোলন, ক্ষমতা, কারাবরণ ও আপসহীন নেতৃত্বের গল্প। কিন্তু এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের আড়ালে ছিলেন এক নীরব মুখ—গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম, যিনি দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছায়ার মতো সঙ্গী ছিলেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচনায় না এলেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন ফাতেমা। হাসপাতালের নিঃসঙ্গ রাত, গৃহবন্দিত্বের দীর্ঘ সময়, কারাগারের কঠিন দিন কিংবা বিদেশ সফরের নীরব করিডর—সবখানেই তার উপস্থিতি ছিল অবিচ্ছিন্ন।

ভোলার সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের শাহ-মাদার গ্রামে জন্ম ফাতেমা বেগমের। তিনি রফিকুল ইসলাম ও মালেকা বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। একই ইউনিয়নের কৃষক মো. হারুন লাহাড়ির সঙ্গে বিয়ের পর মেঘনা নদীর চরে কৃষিকাজ করে চলছিল তাদের জীবন।

তাদের সংসারে জন্ম নেয় মেয়ে জাকিয়া ইসলাম রিয়া ও ছেলে মো. রিফাত। তবে ২০০৮ সালে মাত্র দুই বছরের ছেলেকে রেখে স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা গেলে জীবনের মোড় ঘুরে যায়। সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে গেলেও পারিবারিক আর্থিক সংকট তাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। সন্তানদের গ্রামে রেখে কাজের সন্ধানে ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি।

২০০৯ সালে পূর্বপরিচয়ের সূত্রে কাজ পান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে। সেখান থেকেই শুরু হয় এক দীর্ঘ সহযাত্রা। ওষুধ খাওয়ানো, চলাফেরায় সহায়তা, অসুস্থতায় হাত ধরে রাখা—এসব দায়িত্বের বাইরেও গড়ে ওঠে এক মানবিক সম্পর্ক।

২০১৪ সালের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচির সময় গুলশানের ফিরোজার সামনে পুলিশের বাধায় যখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত, শরীর সামলাতে না পেরে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন খালেদা জিয়া। সেই মুহূর্তে নীরবে তার হাত শক্ত করে ধরে ছিলেন ফাতেমা—যা ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা পড়ে মানবিক দৃশ্য হিসেবে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের রায়ে খালেদা জিয়া কারাগারে গেলে আইনজীবীদের আবেদনে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দেয় আদালত। কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই তিনি ছয় দিন পর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন।

২০২১ সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালেও খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তিনি। যখন মহামারির ভয়ে অনেকেই দূরে সরে গিয়েছিলেন, তখন ফাতেমা ছিলেন অবিচল সেবিকা হয়ে।

সবশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকাকালীনও এবং আগের বিদেশ সফরগুলোতেও নীরবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

কোনো পদ-পদবি কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও ইতিহাসের কঠিন সময়গুলোতে ফাতেমা বেগম ছিলেন অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। তিনি প্রমাণ করে গেছেন—সব সম্পর্ক ক্ষমতার নয়, কিছু সম্পর্ক শুধু দায়িত্ব, মানবিকতা আর নিঃশব্দ ভালোবাসার।

রাজনীতি বিভাগের অন্যান্য খবর

 Somoyer Kotha
Follow Us

৪র্থ তলা, হাউজ# ২৭, রোড# ১ ব্লক# এ বনশ্রী , রামপুরা, ঢাকা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ ইয়াছিন মিয়া

নিউজ
ফোনঃ +880 1975681488
Email: sobarkothabdnews@gmail.com

বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +880 1975681488
Email: sobarkothabdnews@gmail.com

©️২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || sobarkotha.com