নিউজ ডেস্ক :

প্রায় দেড় যুগ পর সপরিবারে ঢাকার মাটিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তাঁকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

বিমানবন্দরে পৌঁছালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় নেতাদের সঙ্গে কোলাকুলি করেন তারেক রহমান। পরে ফুলের মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন ডা. জুবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। এরপর ভিআইপি লাউঞ্জে তিনি স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও আলাপচারিতায় অংশ নেন।

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীর পূর্বাচলের জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে, যা ৩০০ ফিট এলাকা নামে পরিচিত, সেখানে গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছে বিএনপি। কুড়িল মোড়সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুট আয়তনের একটি বিশাল মঞ্চ।

এর আগে লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৩৬ মিনিটে, হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানে সপরিবারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তারেক রহমান। দেশে ফেরার অনুভূতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি লেখেন, ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে।’

বিমান সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইট বিজি-২০২ বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে লন্ডন–সিলেট–ঢাকা রুটে দেশে ফেরেন তারেক রহমান। ফ্লাইটে তার জন্য বিশেষভাবে এ-১ সিট বরাদ্দ ছিল। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, ব্যক্তিগত সচিব আব্দুর রহমান সানি, দলের প্রেস উইংয়ের সালেহ শিবলী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কামাল উদ্দিন, সৈয়দ মইনউদ্দিন আহমেদ ও তাবাসসুম ফারহানা।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন তারেক রহমান। কারামুক্তির পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবারে লন্ডনে যান। ওই বছরের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক মামলার কারণে তার দেশে ফেরা দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিনি প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরলেন।

দলীয় সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে পরিবার ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তারেক রহমান পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পরে বিমানবন্দর সড়ক ও কাকলী মোড় হয়ে গুলশান-২–এর নিজ বাসভবনে ফিরবেন। এদিন তার আর কোনো কর্মসূচি নেই।

এর আগে সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রায় এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতির পর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে বিমানটি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।