নিউজ ডেস্ক :

নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য জনগণের সহযোগিতা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহ্বান জানানোর পর অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। তার ফেসবুক আহ্বানের পর কয়েক ঘণ্টায় অনুদানের পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে লক্ষাধিক টাকা।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পোস্টে ডা. তাসনিম জারা জানান, মাত্র সাত ঘণ্টার ব্যবধানে সাধারণ মানুষ ১২ লাখ টাকার বেশি অনুদান পাঠিয়েছেন। এত স্বল্প সময়ে এ ধরনের সাড়া তাদের কল্পনারও বাইরে ছিল বলে উল্লেখ করে তিনি অনুদানকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা। এর মধ্যে আরও প্রায় ৩৪ লাখ টাকা সংগ্রহ সম্পন্ন হলে ফান্ড সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।

তিনি আরও জানান, রাত ২টার পর বিকাশের নির্ধারিত লিমিট অতিক্রম করায় আপাতত ওই মাধ্যমে টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনুদান গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে একই রাতে দেড়টার দিকে দেওয়া আরেকটি স্ট্যাটাসে ডা. তাসনিম জারা জানান, চার ঘণ্টার মধ্যেই সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকায়। তিনি লেখেন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যে সাড়া পেয়েছেন, তা তাকে গভীরভাবে আবেগতাড়িত করেছে।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, অনুদানের অঙ্কের চেয়েও বেশি গুরুত্ব বহন করছে অর্থের উৎস। বেশিরভাগ অর্থ এসেছে খুব ছোট অঙ্কে—৫, ১০, ২০, ৫০ কিংবা ১০০ টাকার অনুদান হিসেবে। অনেকেই অনুদানের সঙ্গে ছোট বার্তাও পাঠিয়েছেন। একজন শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আমি স্টুডেন্ট, সামর্থ্য অনুযায়ী দিলাম।’

ডা. তাসনিম জারা আরও জানান, শুরু থেকেই দুটি অ্যাকাউন্ট শূন্য ব্যালান্স থেকে চালু করা হয়েছে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিটি লেনদেনের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। লক্ষ্য পূরণ হলেই অনুদান সংগ্রহ বন্ধ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি প্রথমবারের মতো নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য জনগণের সহায়তা চান। ওই ভিডিওতে তিনি নিজের বিকাশ পার্সোনাল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করেন। পাশাপাশি কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে তা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে জানানোর অনুরোধ করেন।

ভিডিও পোস্টে তাসনিম জারা উল্লেখ করেন, আইন অনুযায়ী একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা বা ভোটারপ্রতি ১০ টাকা ব্যয় করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে অনেক প্রার্থী ২০ থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন বলে শোনা যায়, যদিও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হিসাবে তারা ২৫ লাখ টাকার কথাই উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এই ধরনের মিথ্যা ও অসততার রাজনীতি তিনি করতে চান না। আইনে অনুমোদিত সীমার বাইরে এক টাকাও খরচ করবেন না—এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, অনেকে এটিকে অসম্ভব মনে করলেও নতুন বাংলাদেশ গড়তে এর কোনো বিকল্প নেই।