নিউজ ডেস্ক :

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক ও ক্ষোভ। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে শোবিজ, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ—সব মহল থেকেই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি জানানো হচ্ছে।

মূল প্রতিবেদন

ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তায় ভরে ওঠে টাইমলাইন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক কর্মী ও নেটিজেনরা একে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

একই সঙ্গে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত থেকেই রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা শহরে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। পাহাড় থেকে সমতল—সবখানেই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কারিগরদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি ওঠে।

সংগঠনের প্রতিক্রিয়া

ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কঠোর ভাষায় বিচার দাবি করেছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়,

“খুনি যদি জাহান্নামেও থাকে, সেখান থেকে এনে আমাদের সামনে হাজির করতে হবে। আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সহিংসতা পরিহার করে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব, ইনশাআল্লাহ।”

হামলার বিবরণ

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে গণসংযোগকালে রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। সে সময় তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে গুলি করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

চিকিৎসা ও মৃত্যু

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের বরাতে জানা যায়, গুলি তার মাথার ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায় এবং গুলির একটি অংশ মস্তিষ্কে থেকে যায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।