গভীর নিম্নচাপে পটুয়খালীর উপকূল প্লাবিত, পানিবন্দি ১০ হাজার মানুষ
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়া নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে এবং ক্রমন্বয়ে দুর্বল হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (বিজ্ঞপ্তি নং-০৩) বলা হয়েছে।
এর প্রভাবে ভোর রাত থেকেই পটুয়খালীর উপকূলে দমকা বাতাসসহ মুষালধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে। জেলাশহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে নৌ-পথ নির্ভর রাঙ্গাবালী উপজেলা। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৪ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে পুরো চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন এবং চরমোন্তাজের মিটার বাজার, চর আন্ডা, হিন্দু গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ। এদিকে সকাল থেকেই জেলার নৌ-পথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আবহাওয়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। এতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরসমূহকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারনে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলা হয়।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুবা সুখী জানান, “সকালে ৬টার দিকে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নেয়, যার ফলে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২.৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।”
নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের ছোট নৌযান, ট্রলার, স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পটুয়াখালী-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ আপাতত চালু থাকলেও পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা বহাল থাকবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “মাছ ধরার উপরে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলায় গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলার তীরে নিরাপদে আছে। তবে সমুদ্র এখন প্রচণ্ড উত্তাল।”
রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দা মাহামুদ হাসান রাজীব বলেন, “আগুনমুখা নদী এখন উত্তাল। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জোয়ারের পানি ঢুকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ছিঁড়ে এবং বাহিরের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।”
বাহেরচর বাজারে মোবাইল জোনের সত্ত্বাধিকারী আল-আসাদ বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাসে রাঙ্গাবালী উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্যসা থাকে তীব্র। এতে করে জরুরী যোগাযোগ কিংবা আবহাওয়ার খবরাখবর সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বিপ্লব হাওলাদার জানান, “অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত। নদী থেকে পানি প্রবেশ এখনো অব্যাহত থাকায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন।”
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেনা বলেন, “চরমোন্তাজের মিটার বাজার, হিন্দু গ্রাম ও চরআন্ডা এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। পানি ঢোকা অব্যাহত থাকলে কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হতে পারে।”
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম জানান, “এখন পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।”
৪র্থ তলা, হাউজ# ২৭, রোড# ১ ব্লক# এ বনশ্রী , রামপুরা, ঢাকা।
সম্পাদক
মোজাম্মেল দিলন
প্রকাশক
সবার কথা মিডিয়া লিমিটেড
সবার কথা মিডিয়া লিঃ এর একটি প্রতিষ্ঠান।
নিউজ
ফোনঃ +৮৮ ০২২২৪৪০৬০৭০
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
বিজ্ঞাপণ
ফোনঃ +৮৮ ০২২২৪৪০৬০৭০
Email: sobarkothabdnews@gmail.com
©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || sobarkotha.com